অর্থনৈতিক রিপোর্টার
শেয়ারের দাম বাড়িয়ে নিয়ে পুঁজিবাজারকে আবারও পতনের মুখে ঠেলে দিচ্ছে অসাধু চক্র। ৬ দিনের ব্যবধানে দৈনিক লেনদেন প্রায় অর্ধেকে নামার পর এমন অভিযোগ করছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়ন্ত্রণ সংস্থার যথাযথ পদক্ষেপের অভাবেই বারবার হোঁচট খাচ্ছে পুঁজিবাজার। তাই স্রোতে গা না ভাসিয়ে বিনিয়োগের পরামর্শ ঢাকা স্টক এক্সেচেঞ্জের (ডিএসই)।
শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার ধাক্কা সামলে গত ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেশ ভালো উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছিল দেশের পুঁজিাবাজারের লেনদেন। ৮ ফেব্রুয়ারি লেনদেন ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে সপ্তাহ শেষ হয়। তবে এর পরের কার্যদিবস ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে পড়তে থাকে ঢাকার পুঁজিবাজার। টানা ৬ কার্যদিবসের লেনদেনে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ১৮৮ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট। দুই হাজার কোটি টাকার আশা ভঙ্গ করে দৈনিক লেনদেন নেমে এসেছে হাজার কোটির নিচে। কয়েকদিনের মধ্যে পুঁজিবাজার সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি খায় ১৮ ফেব্রুয়ারি। সেদিন ২২টি দুর্বল কোম্পানিকে জেড শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে বাজার থেকে আবারও মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা। তাদের দাবি, কারসাজি করে শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক বাড়িয়ে মাঝেমাঝেই ফায়দা লুটছে অসাধু চক্র। এমন দাবি করে এক বিনিয়োগকারী বলেন, দেখা যাচ্ছে, সিন্ডিকেট করে ১০ টাকার শেয়ারের দাম ৫০ টাকা হয়ে যাচ্ছে।
এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আবারও কেনো উল্টো পথে পুঁজিবাজার? এ প্রশ্নের জবাবে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, পুঁজিবাজার কখনো ভালো থাকে, আবার কখনও খারাপ থাকে। এটি কিন্তু ছোট একটি ব্যান্ডের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। আমরা শেয়ারবাজারে এমন বড় ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তন চাই, যেটি সত্যিকার অর্থে শিল্পায়নের সহায়তা করবে। আমি মনে করি বাংলাদেশ এখনও সে অবস্থানে আসেনি। তবে যেকোনো পরিস্থিতে গুজবে কান না দিয়ে বুঝেশুনে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এটিএম তারিকুজ্জামান। তিনি বলেন, মার্কেট গভর্নেন্স ও করপোরেট গভর্নেন্সের জায়গাটি যদি আমরা শক্ত করতে পারি এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে আমাদের পুঁজিবাজার আরও বেশি গতিশীল হবে। ডিএসইর পরিদর্শনে তালিকাভুক্ত বেশ কয়েকটি কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ পাওয়ার পরও নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে পরবর্তী কোনো নির্দেশনা না আসায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজার কারসাজির শঙ্কা বিরাজ করছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Admin News